২য় পর্ব
২য় পর্ব পড়ার আগে ১ম পর্ব পড়ুন
পরদিন সকালে তাদের বাসায় আসে ডেভিড, ডেভিড মূলত একটি মিসিং কেসের তদন্ত করতে এসেছে। সে থমাসকে ঋতুর ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“আপনি কি তাকে চেনেন?”
থমাস বলেন, “হ্যাঁ, সে আমার স্ত্রী।”
এরপর, ডেভিড ঋতুকে ডাকতে বলেন। থমাস জানতে চান, “কি হয়েছে?”
ডেভিড বলেন, “আপনার স্ত্রীকে ডাকুন, তারপর সব বলছি।”
ঋতু এলে, ডেভিড নিজেকে পরিচয় দেন এবং তাকে একটি ছবি দেখান। তবে ঋতু কিছুই বুঝতে পারে না।
ডেভিড জিজ্ঞেস করেন, “আপনি কি মরিয়ম কলেজের কোনো মেয়েকে চেনেন?”
ঋতু উত্তর দেয়, “না, আমি কাউকে চিনি না।”
ডেভিড বলেন, “তাহলে আপনি হোস্টেলের সামনে কেন গিয়েছিলেন?”
ঋতু অবাক হয়ে বলে, “আমি সেখানে গিয়েছিলাম?”
ডেভিড আরও জিজ্ঞেস করে, “আপনার মুখে কি হয়েছে?”
পাশ থেকে থমাস বলেন, “স্যার, কালকেও পড়ে গিয়েছিল।”
ডেভিড এবার ঋতুকে ছায়ার ছবি দেখায়। ছবিটি দেখে ঋতু বলে, “আমার মনে হয় আমি তাকে কোথাও দেখেছি, কিন্তু আমার মনে পড়ছে না।”
ডেভিড রাগ করে বলে, “গত কয়েকদিন ধরেই এই মেয়েটি মিসিং! ভালো করে বলুন, তাকে কোথায় দেখেছেন?”
তবে ঋতু কিছুই বলতে পারে না।
থমাস তখন ডেভিডকে একটু বাইরে আসতে বলে। ডেভিড বাইরে আসলে থমাস বলতে শুরু করে, “গত আট বছর ধরে সে ডাক্তার ম্যানুয়েলের রোগী। তার কিছুই মনে থাকে না। আপনি যদি তাকে প্রশ্ন করেন, প্রতিবার ভিন্ন উত্তর পাবেন।”
এটা শুনে ডেভিড হতাশ হয়। সে থমাসকে বলে, “কাল আপনার স্ত্রীকে নিয়ে দয়া করে পুলিশ ক্লাবে আসবেন।”
পরদিন থমাস ঋতুকে নিয়ে পুলিশ ক্লাবে আসে। ডেভিড ঋতুকে জিজ্ঞেস করে, “আপনি কলেজ হোস্টেলের বাইরে কি করছিলেন? আপনার কি কিছু মনে পড়ছে?”
ঋতু বলে, “হোস্টেলের সামনে এই মেয়েটি কোনো এক মহিলার সাথে কথা বলছিল।”
ডেভিড বলেন, “কার সাথে কথা বলছিল?”
ঋতু ভেবে চিন্তে বলে, “যে মহিলাটি ছায়ার সাথে কথা বলছিল, সে রেমা হতে পারে।”
ডেভিড জানতে চায়, “রেমা কে?”
ঋতু জানায়, “রেমা আমাদের বাসায় কাজ করে।”
এটা শুনে থমাস ঋতুকে বলে, “তুমি এসব কি বললে? রেমা সবসময় তোমার দেখাশোনা করে আর তুমি এখন তাকে ফাঁসাচ্ছো?”
এরপর পুলিশ অফিসার রঞ্জন গিয়ে রেমা ও বিজুকে ডেকে আনে।
রেমা ডেভিডকে বলে, “স্যার, আপনি যেদিনের কথা বলছেন, আমি ওইদিন বিয়ে খেতে গিয়েছিলাম। আমার কথা বিশ্বাস না হলে আমার স্বামী বিজুকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।”
বিজুকে ডাকা হলে সে বলে, “স্যার, সত্যি আমরা বিয়ে খেতে গিয়েছিলাম।”
ডেভিড বুঝতে পারে, তারা এই কেসের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
ডেভিড থমাসের সাথে কথা বলতে বলতে ঋতুর মেডিকেল রিপোর্ট দেখছিল।
থমাস ডেভিডকে বলে, “স্যার, এক্সিডেন্টের পর তার সব স্মৃতি মুছে গিয়েছে। রেমা ঋতুর দেখাশোনা করে। কয়েকদিন ধরে সে রেমাকে দেখতে পাচ্ছে না, তাই হয়তো এসব মনগড়া কাহিনি বলেছে।”
ডেভিড থমাসকে বলে, “সিসিটিভির ফুটেজে দেখলাম, বাসায় চোর এসেছিল। তো থানায় অভিযোগ করলেন না কেন?”
থমাস বলে, “বাসা থেকে কোনো কিছু চুরি হয়নি, তাই কমপ্লেন করিনি।”
ডেভিড থমাসকে বলে, “আপনার স্ত্রীর মানসিক অবস্থা অনুযায়ী আমি একজন ক্রিমিনোলজিস্টকে ডাকছি। সে ঋতুর মেন্টাল কন্ডিশন অনুযায়ী ইনভেস্টিগেশন করবে। উপর থেকে অনেক পলিটিক্যাল প্রেসার আছে। আর এই কেসের একমাত্র সন্দেহভাজন ঋতু। তাই আপনি কিছু মনে করবেন না।”
এসব শুনে থমাসও রাজি হয়।
ডেভিড তাদেরকে আবারো পরদিন সকাল ১০টায় আসতে বলে। তবে থমাস যাওয়ার সময় ডেভিডকে বলে, “স্যার, আমাদের কোনো বাচ্চা নেই। এসব ঋতুর কল্পনা।”
এটা শুনে ডেভিড যেন ৪২০ ভোল্টের শক খায়!
পরদিন সকালে মীরা নামের এক ক্রিমিনোলজিস্ট তদন্ত করতে আসে। মীরা ও ডেভিড ঋতুকে অনেক প্রশ্ন করে, কিন্তু ঋতু কোনো উত্তর দিতে পারে না। কারণ, তার কিছুই মনে নেই।
ডেভিড ঋতুকে বলে, “আপনি সাতবার কলেজ হোস্টেলে গিয়েছিলেন। আপনার কি কিছু মনে পড়ছে?”
এটা শুনে ঋতু খুব অবাক হয়।
ডেভিড ঋতুর চেহারা দেখে বুঝতে পারে, তার মানসিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাই সে ঋতুকে বাসায় যেতে বলে।
বাইরে আসতেই ঋতু হঠাৎই এক ভিশন দেখতে শুরু করে। সে দেখতে পায়, মেয়েটির সাথে যে মহিলাটি রয়েছে, সে আর কেউ নয়—ঋতু নিজেই!
এরপর থমাস ঋতুকে নিয়ে রেমার বাসায় যায়। রেমা এসবের জন্য আর কাজে আসতে চায় না।
থমাস অনেক অনুরোধ করে বলে, “ঋতুর মানসিক অবস্থা ভালো নয়। এজন্য সে এসব বলেছে। তবে আমি এখন থেকে খেয়াল রাখবো, সে যেন এমন ভুল আর না করে।”
এর ফলে, রেমা আবার কাজে আসতে রাজি হয়।
এদিকে, পুলিশ ব্রিজের নিচে একটি লাশ খুঁজে পায়।
লাশের কাছ থেকে একটি ব্রেসলেট পাওয়া যায়।
রেমা অনলাইন থেকে জুতা কিনেছে। এটা দেখে ঋতু বলে, “আমারও অনলাইন থেকে কিছু কিনতে হবে।”
তখন রেমা বলে, “দিদি, আপনার তো ব্রেসলেট হারিয়ে গিয়েছে! আপনি অনলাইন থেকে আরেকটা নিতে পারেন।”
ঋতু অবাক হয়ে বলে, “আমার ব্রেসলেট হারিয়ে গিয়েছে?”
সে হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে, সত্যিই তার ব্রেসলেট নেই!
এরপর তারা ব্রেসলেট খুঁজতে গাড়ির সার্ভিসিং সেন্টারে যায় এবং ধীরে ধীরে রহস্য আরও ঘনীভূত হতে থাকে।
Leave a comment